দক্ষিণ কোরিয়া, প্রযুক্তি, সংস্কৃতি, এবং অর্থনীতির ক্ষেত্রে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দেশগুলোর একটি, যেখানে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী, ভ্রমণকারী, প্রবাসী, এবং ব্যবসায়ীদের আগ্রহ ক্রমশ বাড়ছে। দক্ষিণ কোরিয়ার মুদ্রা কোরিয়ান ওয়ান (KRW) এবং এর বাংলাদেশি টাকায় (BDT) বিনিময় হার জানা ভ্রমণ, শিক্ষা, রেমিট্যান্স, বা বাণিজ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই নিবন্ধে আমরা দক্ষিণ কোরিয়ার টাকার রেট, বিভিন্ন পরিমাণ ওয়ানের বাংলাদেশি টাকায় মূল্য, এবং সম্পর্কিত তথ্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী, ১ কোরিয়ান ওয়ান সমান বাংলাদেশি ৮ পয়সা।
এই পোস্টে আপনি জানতে পারবেন:
দক্ষিণ কোরিয়া ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা ২০২৫
১ কোরিয়ান ওয়ান সমান বাংলাদেশি ৮ পয়সা।
দক্ষিণ কোরিয়ার ১০০ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা
১০০ কোরিয়ান ওয়ান সমান বাংলাদেশি ৮ টাকা ৮০ পয়সা।
কোরিয়ান ১,০০০ ওয়ান বাংলাদেশের কত টাকা
১,০০০ কোরিয়ান ওয়ান সমান বাংলাদেশি ৮৮ টাকা।
কোরিয়ান ১০,০০০ ওয়ান বাংলাদেশের কত টাকা
১০,০০০ কোরিয়ান ওয়ান সমান বাংলাদেশি ৮৮০ টাকা।
কোরিয়ান ওয়ানের বিনিময় হারের তালিকা
নিচের টেবিলে বিভিন্ন পরিমাণ কোরিয়ান ওয়ানের বাংলাদেশি টাকায় মান দেওয়া হলো:
কোরিয়ান ওয়ান (KRW) | বাংলাদেশি টাকা (BDT) |
---|---|
১ ওয়ান | ৮ পয়সা |
১০০ ওয়ান | ৮ টাকা ৮০ পয়সা |
১,০০০ ওয়ান | ৮৮ টাকা |
১০,০০০ ওয়ান | ৮৮০ টাকা |
১০০,০০০ ওয়ান | ৮৮০০ টাকা |
দক্ষিণ কোরিয়ার মুদ্রা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারি মুদ্রা হলো কোরিয়ান ওয়ান (KRW), যা ১০০ জিওন-এ বিভক্ত। তবে, জিওন এখন আর প্রচলিত নয়। ওয়ান দক্ষিণ কোরিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক, Bank of Korea, দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এটি দক্ষিণ কোরিয়ার সকল লেনদেনে ব্যবহৃত হয় এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যেও গ্রহণযোগ্য।
কোরিয়ান ওয়ানের নোট এবং কয়েন
- নোট: ১,০০০, ৫,০০০, ১০,০০০, এবং ৫০,০০০ ওয়ান।
- কয়েন: ১০, ৫০, ১০০, এবং ৫০০ ওয়ান।
কোরিয়ান ওয়ান চেনার উপায়
- নোটের ডিজাইন: ওয়ান নোটে কোরিয়ার ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব এবং সাংস্কৃতিক প্রতীক থাকে। উদাহরণস্বরূপ, ১০,০০০ ওয়ান নোটে সেজং দ্য গ্রেটের ছবি।
- নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য: হলোগ্রাম, ওয়াটারমার্ক, এবং মাইক্রোটেক্সট। আলোর বিপরীতে ধরলে নোটের মূল্য দেখা যায়।
- পরামর্শ: জাল মুদ্রা এড়াতে শুধুমাত্র Bank of Korea বা অনুমোদিত মানি এক্সচেঞ্জ থেকে টাকা ভাঙান।
কেন কোরিয়ান ওয়ানের মান জানা গুরুত্বপূর্ণ?
- প্রবাসীদের জন্য: দক্ষিণ কোরিয়ায় বাংলাদেশি প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠানোর সময় ওয়ানের রেটের উপর নির্ভর করে।
- শিক্ষার্থীদের জন্য: সিউল বা বুসানের বিশ্ববিদ্যালয়ে টিউশন ফি এবং জীবনযাত্রার খরচ ওয়ানে পরিশোধ করতে হয়।
- ভ্রমণকারীদের জন্য: সিউল, জেজু দ্বীপ, বা ইনচিওন ভ্রমণের জন্য বাজেট তৈরিতে ওয়ানের রেট জানা জরুরি। আরও জানুন: থাইল্যান্ড ওয়ার্ক ভিসা।
- ব্যবসায়ীদের জন্য: দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে ইলেকট্রনিক্স বা অটোমোবাইল আমদানি-রপ্তানিতে ওয়ানের মান গুরুত্বপূর্ণ। দেখুন: কাতার রিয়ালের রেট।
দক্ষিণ কোরিয়া থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর উপায়
দক্ষিণ কোরিয়া থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর নিরাপদ পদ্ধতি:
- ব্যাংক ট্রান্সফার: Shinhan Bank, KEB Hana Bank, বা Woori Bank থেকে বাংলাদেশের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠান।
- প্রয়োজনীয় তথ্য: প্রাপকের নাম, অ্যাকাউন্ট নম্বর, SWIFT/BIC কোড।
- ফি: ৫,০০০-১৫,০০০ ওয়ান।
- সময়: ২-৫ কার্যদিবস।
- অনলাইন সার্ভিস: Wise, Western Union, MoneyGram।
- ফি: ০.৫-১.৫%।
- সময়: কয়েক মিনিট থেকে ১ দিন।
- বিকাশ: অনুমোদিত এজেন্টের মাধ্যমে বিকাশে টাকা পাঠান।
- রেট: ০.০৮৫ টাকা প্রতি ওয়ান।
- সময়: তাৎক্ষণিক।
টিপস:
- সর্বনিম্ন ফি এবং ভালো রেটের জন্য Wise বা MoneyGram ব্যবহার করুন।
- বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম মেনে বৈধ চ্যানেল ব্যবহার করুন।
- প্রয়োজনীয় কাগজপত্র: পাসপোর্ট, ভিসা, এবং আয়ের উৎসের প্রমাণ।
কোরিয়ান ওয়ান কোথায় ভাঙানো যায়?
বাংলাদেশে কোরিয়ান ওয়ান ভাঙানোর জন্য:
- ব্যাংক: সোনালী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক।
- মানি এক্সচেঞ্জ হাউস: ঢাকার গুলশান, মতিঝিল, বা উত্তরার অনুমোদিত এক্সচেঞ্জ হাউস।
- অনলাইন প্ল্যাটফর্ম: Wise, Payoneer (সীমিতভাবে)।
পরামর্শ: কোরিয়ান ওয়ান বাংলাদেশে কম প্রচলিত, তাই মানি এক্সচেঞ্জ হাউসে আগে থেকে যোগাযোগ করুন। বিমানবন্দরের এক্সচেঞ্জ কাউন্টার এড়িয়ে চলুন কারণ রেট কম হতে পারে।
কেন কোরিয়ান ওয়ানের মান তুলনামূলকভাবে কম?
কোরিয়ান ওয়ানের মান বাংলাদেশি টাকার তুলনায় কম হওয়ার কারণ:
- মুদ্রার গঠন: ওয়ানের মান ঐতিহাসিকভাবে কম রাখা হয়েছে, যাতে ছোট লেনদেন সহজ হয়।
- অর্থনৈতিক নীতি: দক্ষিণ কোরিয়ার রপ্তানি-ভিত্তিক অর্থনীতি ওয়ানের মান নিয়ন্ত্রণ করে।
- আন্তর্জাতিক চাহিদা: ওয়ান প্রধানত দেশের অভ্যন্তরীণ লেনদেনে ব্যবহৃত হয়, তাই আন্তর্জাতিক চাহিদা কম।
দক্ষিণ কোরিয়া ভ্রমণের জন্য মুদ্রা বিনিময় টিপস
- নগদ বহন: ছোট লেনদেনের জন্য ৫০,০০০-১০০,০০০ ওয়ান নগদ রাখুন।
- ক্রেডিট কার্ড: সিউল বা বুসানের বড় হোটেল, রেস্তোরাঁয় Visa, Mastercard গৃহীত।
- মানি এক্সচেঞ্জ: Myeongdong বা Incheon Airport-এর KEB Hana Bank-এ ভালো রেট পাওয়া যায়।
- এটিএম: বাংলাদেশি কার্ডে কোরিয়ায় টাকা তুলতে ফি লাগে, তাই বড় অঙ্ক তুলুন।
কোরিয়ান ওয়ানের ইতিহাস
কোরিয়ান ওয়ান প্রথম চালু হয় ১৯৬২ সালে, যা পূর্বের হাওন মুদ্রার স্থানে। ১৯৯৭ সালের এশিয়ান আর্থিক সংকটে ওয়ানের মান কমলেও, দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পর এটি স্থিতিশীল হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রযুক্তি ও রপ্তানি শিল্প ওয়ানের মানকে সমর্থন করে।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ)
দক্ষিণ কোরিয়ার মুদ্রার নাম কী?
কোরিয়ান ওয়ান (KRW)।
দক্ষিণ কোরিয়া ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা?
১ কোরিয়ান ওয়ান সমান বাংলাদেশি ৮ পয়সা।
দক্ষিণ কোরিয়ার ১০০ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা?
১০০ কোরিয়ান ওয়ান সমান বাংলাদেশি ৮ টাকা ৮০ পয়সা।
কোরিয়ান ১০,০০০ ওয়ান বাংলাদেশের কত টাকা?
১০,০০০ কোরিয়ান ওয়ান সমান বাংলাদেশি ৮৮০ টাকা।
দক্ষিণ কোরিয়ায় ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ করা হয়?
হ্যাঁ, সিউল বা বুসানের বড় হোটেল, রেস্তোরাঁয় Visa এবং Mastercard গৃহীত। তবে, স্থানীয় বাজারে নগদ ওয়ান বহন করুন।
কোরিয়ান ওয়ান কোথায় ভাঙানো যায়?
বাংলাদেশে সোনালী ব্যাংক, গুলশানের মানি এক্সচেঞ্জ হাউস, বা Wise-এর মাধ্যমে ওয়ান ভাঙানো যায়।
উপসংহার
দক্ষিণ কোরিয়ার মুদ্রা কোরিয়ান ওয়ান বাংলাদেশি টাকার তুলনায় কম মূল্যের, এবং ১ ওয়ান সমান বাংলাদেশি ৮ পয়সা। ভ্রমণ, শিক্ষা, রেমিট্যান্স, বা ব্যবসার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ায় যাওয়ার আগে সঠিক বিনিময় হার জানা জরুরি। বৈধ চ্যানেল ব্যবহার করে এবং রেট ট্র্যাক করে আপনি সর্বোত্তম সুবিধা পেতে পারেন। অন্যান্য দেশের মুদ্রার মান জানতে দেখুন ওমান টাকার রেট এবং কাতার রিয়ালের রেট।